৭ বছরের কন্যা সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে সন্তানের পিতৃ পরিচয়ের দাবিতে শাহজাহান সিরাজ সুজন নামের এক ব্যক্তিকে স্বামী দাবি করে তার বাড়িতে অনশন শুরু করেছেন মরিয়ম আক্তার (২৬) নামের এক নারী। সন্তানের স্বীকৃতি না পাওয়া পর্যন্ত তিনি অনশন চালিয়ে যাবেন বলেও জানিয়েছেন।
মরিয়ম আক্তার দিনাজপুরের পার্বতীপুর থানার শিবরামপুর এলাকার সোলায়মান মন্ডলের মেয়ে। জেলার ডোমার উপজেলার হরিনচড়া ইউনিয়নের পিপাড়ার বাজার নামক এলাকায় সুজনের বাড়িতে শুক্রবার সকালে ওই নারী সন্তানসহ অবস্থান নেন।
সুজন ডোমার উপজেলার হরিনচড়া ইউনিয়নের পিপাঁড়ার বাজার এলাকার মো. আজিজুল হকের ছেলে। তবে আজিজুল হক দ্বিতীয় বিয়ে করে সেই স্ত্রীকে নিয়ে সংসার করছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।
স্বামীর বাড়িতে অবস্থান নেওয়া মরিয়ম বেগম জানান, মোবাইলের মাধ্যমে পরিচয়ের পর সুজনের সঙ্গে তার প্রেমের শুরু। বছরখানেক পর ২০১৪ সালের ২০ মার্চ ঢাকায় তারা বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই থাকেন ঢাকায়। সুজনের বাড়িতে বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হলে পরিবার তার লেখাপড়ার খরচ বন্ধ করে দেয়। তখন মরিয়মই চাকরি করে স্বামীর লেখাপড়ার খরচ জুগিয়েছেন। এরই একপর্যায়ে তিনি সন্তানসম্ভবা হন। কিন্তু তিন মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রীকে রেখে অন্যত্র চলে যান সুজন। এর আগেও তিনি এ বাড়িটিতে এসেছিলেন। সেবার ১৮ দিন অবস্থান করেছিলেন। এরপর কৌশলে সুজন তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে মোবাইলের মাধ্যমে মাঝেমধ্যে যোগাযোগ রাখতেন।
মরিয়ম জানান, ২০১৫ সালে একদিন সুজন তাকে ফোন দিয়ে জানায়, তার বাবা-মা তাকে জোর করে বিয়ে দিয়েছে। সন্তান জন্মের পর সুজন শুধু মোবাইলে তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। এখন মেয়ে খাদিজাকুল কোবরা সূরার বয়স সাত বছর। মেয়ের সঙ্গে মাঝেমধ্যে কথা হতো সুজনের। ‘বাবা কোথায়’ মেয়ে জানতে চাইলে কোনো উত্তর দিতে পারেন না মরিয়ম। সে কারণেই এবার সন্তানের পিতৃ পরিচয়ের দাবি নিয়ে স্বামীর বাড়িতে হাজির হয়েছেন তিনি। এরইমধ্যে গত রোজার ঈদের আগ পর্যন্ত সুজন নাকি তাকে ধৈর্য্য ধরতেও বলেন।
সুজনের মা শরিফা বেগম বলেন, আমার ছেলে যে তাকে বিয়ে করেছে কোনো প্রমাণ আছে কি না, জানতে চাইলে সে (মরিয়ম) বলে- না, নেই। আমার ছেলেও মেয়েটি সম্পর্কে কিছু জানে না। আমি তাকে প্রমাণ স্বরূপ বিয়ের কাগজপত্র দেখাতে বলেছি। এ-ও বলেছি, প্রমাণ করতে পারলে ছেলের বউ হিসেবে মেনে নেবো।
সুজনের মা আরো বলেন, কোনো কাগজ দেখাতে না পারায় তখন স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে দেড় লাখ টাকায় বিষয়টির মিমাংসা হয়েছিলো। তবে মেয়েটি তারিখ অনুযায়ী না আসায় তাকে টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি। এরপর আমরা পারিবারিকভাবে ২০১৫ সালের ৫ মার্চ আমার ছেলেকে বিয়ে দিই। আজ সকালে হঠাৎ করে মেয়েটি সন্তানসহ বড়বোন ও দুলাভাইকে নিয়ে আমাদের বাড়িতে ঢুকে পড়ে।
এ বিষয়ে হরিনচড়া ইউপি চেয়ারম্যান রাসেল রানা জানান, সন্তান নিয়ে মরিয়ম আক্তার নামের এক নারী এক বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন। ঘটনাস্থলে গেলে বিষয়টি পুরোপুরি বোঝা যাবে। দুই পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।